Connect with us

ক্রিকেট

খেলা ছাড়তে চাওয়া ছেলেটাই মাতাচ্ছে বিপিএল

                                                                    ছবি- সংগৃহীত।

ডেষ্ক রিপোর্ট- যুবদলে খেলার পর প্রিমিয়ারলিগে সেভাবে মেলে ধরতে না পারায় ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছিলেন যেই ছেলেটা, সেই ছেলেটি এখন বিধ্বংসী ওপেনার হিসেবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বলছি মুনিম শাহরিয়ারের কথা। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ব্যাট হাতে প্রথম নজর কেড়েছিলেন এই ওপেনার। খেলেন ৫৩ বলে ৯২ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। আর ২৩ বছর বয়সী ক্রিকেটারের গল্পটাও ঝড়ের মতো। লেখাপড়ায় দারুণ ভালো। ময়মনসিংহ জেলা স্কুলের সেরা ছাত্রদের একজন ছিলেন তিনি।

বর্তমানে এআইইউবি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন বিবিএ নিয়ে। ভালো ছাত্র, তাই ছোটবেলা থেকেই পরিবারের ইচ্ছা ছিল না ক্রিকেট খেলুক। তবে কে শোনে কার কথা! বাবার আদর আসকারায় ব্যাট হাতে তুলে নেন মুনিম। অথচ বিপিএল খেলাটাই অনিশ্চিত ছিলো ময়মনসিংহের এই ছেলেটার। বিপিএল প্লেয়ার ড্রাফটে তাকে নিয়ে অনেকের আগ্রহ থাকাটা স্বাভাবিক হলেও বিস্ময়করভাবে ড্রাফট থেকে কেউই তাকে দলে ভেড়ায়নি। ড্রাফটের বাইরে থেকে পরে তাকে দলে নেয় ফরচুন বরিশাল। তবুও যেনো মুনিমের আকাশে মেঘের ঘনঘটা। দল পেলেও কোভিড পজিটিভ থাকায় খেলার সুযোগ হয়ে ওঠেনি প্রথম ৪ ম্যাচ।

আরও পড়ুন- পুরো আইপিএলে খেলা হচ্ছে না সাকিবের, খেলবেন ফিজ

এদিকে বিপিএলের শুরু থেকেই বরিশালের ওপেনিং ছিল মাথা ব্যথার কারণ। নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৈকত আলীকে দিয়ে টানা চার ম্যাচ ইনিংস উদ্বোধন করালেও তারা ভালো করতে পারেননি। এরপর জ্যাক-লিনটটকেও নামান সাকিব। তাতেও তাদের ভাগ্য ফেরেনি। সমস্যার সমাধান খুঁজতে দুই ম্যাচ আগে ড্রাফটের বাইরে থেকে নেওয়া মুনিমকে প্রথম মাঠে নামায় বরিশাল। কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের দল ঢাকা আবাহনীর হয়ে আগে খেলেছেন তিনি। সেখানে ১৪ ম্যাচে ২ ফিফটিতে ৩৫৫ রান করেছিলেন ১৪৩.১৪ স্ট্রাইক রেটে। তবে কোচের মন জয় করা মুনিমের বিপিএলের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১ রানে থেমেছিল তার ইনিংস।

সিলেটে এসেই নিজের প্রতিভা, সামর্থ্য মেলে ধরা শুরু করেন ডানহাতি ওপেনার। নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ঝকঝকে ৪৫ রানের পর তৃতীয় ম্যাচে ২৮ বলে করেন ৫১ রান। অসাধারণ এই ইনিংসে ছিল রান পাওয়ার তীব্র ক্ষুধা, অদম্য সাহসিকতা ও নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা।

ফিরে এসেই মুনিম ছড়াচ্ছেন মুগ্ধতা, ছড়িয়ে দিচ্ছেন নিজের আগমনী বার্তা। বড় শট খেলার সাহস কিংবা প্রতি আক্রমণে বোলিং এলোমেলো করে দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তার। নিজেকে আরেকধাপ এগিয়ে নিতে মুনিমের আরো ধারাবাহিক হতে হবে, হতে হবে বিধ্বংসী। বিপিএল যেভাবে শুরু করেছেন সেভাবে শেষ করতে পারলেই পৌঁছে যাবেন অভীষ্ট লক্ষ্যে।

মুনিম বলেছেন, “আমি পাওয়ার-প্লেটা ব্যবহার করার চেষ্টা করি। ওই জিনিসটাতে আমার সুবিধা হয়, যে কারণে আমার স্ট্রাইকরেট বেশি থাকে। চেষ্টা করি মেরে মেরে খেলতে। সিম্পল প্ল্যান, বেশি কিছু না। ফিফটি করার কোন লক্ষ্য থাকে না। দলের যেটা চাহিদা সেটাই পালন করার চেষ্টা করি।”

২৩ পেরুনো এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ইতিবাচক মনোভাবের মতো ভাবনাও নেই জাতীয় দলের কোন কোন ব্যাটসম্যানের। টি-টোয়েন্টিতে তাই পাওয়ার-প্লের সুবিধা তুলতে ধুঁকতে হয় বাংলাদেশকে। মুনিম পরিপূর্ণ হয়ে জাতীয়দলের হয়ে এমনই এগ্রেসিভ ব্যাটিং উপহার দিক এমনটাই আশা ক্রিকেট ভক্তদের।

Advertisement

More in ক্রিকেট