Connect with us

ক্রিকেট

অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মিরাজের দল ছাড়া নিয়ে রহস্য !

ছবি : সংগৃহিত

|| ক্রিকডট ডেস্ক || কোন রকম পূর্ব ঘোষণা কিংবা আলোচনা ছাড়াই চট্টগ্রাম দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের এতদিনের অধিনায়কত্ব পালন করা মেহেদী হাসান মিরাজ তাই চট্টগ্রাম দল ছাড়ার সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত নিয়েই চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলেছেন।

আপাতত চট্টগ্রামের হয়ে আর কোন ম্যাচ খেলতে চান না মিরাজ। তবে তার ঢাকা ফেরা নিয়ে চলছিলো নানা টাল বাহানা। চট্টগ্রাম থেকে মিরাজ ও তার পরিবারের ঢাকায় ফেরার ফ্লাইট ছিল বিকাল সাড়ে ৫টায়। সেই হিসেবেই আজ বিকেলে হোটেল পেনিনসুলার নিচে তার স্ত্রী-পুত্র সহ গাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন তার জন্যে।

কিন্তু তিনি নিচে নামতেই সাংবাদিকদের সামনে পড়েন। এবং তার যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটে। মিরাজের কথায় চট্টগ্রাম দলের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয় সামনে আসে। রাগ অভিমান থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে মিরাজ। তার কথায় ছিলো প্রতিবাদের সুর, এমন অপেশাদার আচরণ তিনি মেনে নিতে পারেন নি। পরবর্তীতে ফ্র্যাঞ্চাইজির লোক এসে তাদের ভেতরে নিয়ে যান।

মেহেদী হাসান মিরাজ সপরিবারে হোটেলের নিচে আসার একটু আগেই হোটেলে ঢোকেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ ইয়াসির আলম। তবে সাংবাদিকদের সাথে তিনি কথা বলতে চান নি।

এ বিষয় নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে কথা হয়েছে কিনা এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না পাওয়া গেলেও মিরাজের কথায় সরাসরি আঙ্গুল ছিলো দলের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা সৈয়দ ইয়াসিরের দিকে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মালিকপক্ষ খুব ভালো। তারা কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত নয়। তাদের নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। ইয়াসিরই (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের প্রধান নির্বাহী) মূল কালপ্রিট। ইয়াসির দলে থাকলে আমি খেলব না।’

মেহেদি হাসান মিরাজ

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামের অধিনায়কত্ব হারালেন মিরাজ, প্রধান কোচেও পরিবর্তন

এর আগে সংবাদমাধ্যমকে ইয়াসির জানিয়েছিলেন, দলের প্রধান কোচ পল নিক্সনের পরামর্শেই অধিনায়ক হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে মিরাজকে। কিন্তু আজ সকালেও পল নিক্সন এ ব্যপারে জানতেন না বলে জানা যায়। মিরাজ বলেন, ‘নিক্সন ও রকম কিছুই বলেননি। কোচ নাকি বলেছেন, আমি স্বার্থপর ক্রিকেট খেলি। আমাকে যেন অধিনায়কত্ব না দেওয়া হয়। কিন্তু কোচের সঙ্গে আমার আজ ৩০ মিনিটের মতো কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমি এ রকম কিছু বলিনি। ইয়াসিরের কথা মিথ্যা।’

খেলা শুরু হওয়ার মাত্র ৩ ঘন্টা আগেই তাকে জানানো হয়, খেলায় অধিনায়কের পদে স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন অন্য একজন। ফ্র্যাঞ্চাইজির এমন উদ্ভট আচরণে ক্রুদ্ধ মিরাজ। এমন আচরণ সম্পর্কে বিসিবির প্রধান নির্বাহীকে ই–মেইলে জানিয়েছেন মিরাজ। কাল রাতেই মুঠোফোনে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক এবং অন্যান্য দলে থাকা জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে।

ইসমাইল হায়দার মল্লিক আজ একটি সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, ‘মিরাজ আমার সঙ্গে কথা বলেছে। ও যদি ঢাকায় ফিরে আসে, আমরা চেষ্টা করব দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসা করতে। একজন খেলোয়াড় টুর্নামেন্টের মাঝপথে দল ছেড়ে বেরিয়ে আসবে, এটা কোনোভাবেই ভালো দেখায় না।’

মিরাজকে এমনভাবে কয়েক ঘন্টা আগে দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়, ২০১২–১৩ মৌসুমে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বিপিএলের এক কলঙ্কিত অধ্যায়কে, যা কারোরই কাম্য ছিলোনা। এই চট্টগ্রামেই ম্যাচ শুরুর কিছু মুহুর্ত আগে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দল থেকে বাদ দিয়ে নেতৃত্ব দেওয়া হয় মোহাম্মদ আশরাফুলকে। পরবর্তী সময়ে আকসুর তদন্তে বেরিয়ে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বেরিয়ে আসে সেই ম্যাচের স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনা।

তবে কি এবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে? তবে ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেছেন, ‘আমাদের এ–সংক্রান্ত একটি বিভাগই আছে, যারা এসব ঘটনার ওপর চোখ রাখে। সে রকম কিছু ঘটলে নিশ্চয়ই তাদের নজরে আসবে এবং আমরাও ব্যবস্থা নেব।’

আরও পড়ুন : অনূর্ধ্ব-১৯ এর ব্যর্থতা, চ্যাম্পিয়নদের কেন এই ভরাডুবি !

Advertisement

More in ক্রিকেট